ঈদের কেনাকাটায় নারীরা ছুটছেন প্রসাধনীর দোকানে (ভিডিও)
যেকোনো উৎসবে নিজেকে পরিপাটি রূপ দিতে পছন্দ করেন নারীরা। তাই জামা-জুতার পাশাপাশি চাই প্রসাধনীও। ঈদেও তার ব্যতিক্রম হয় না। তাই বিভিন্ন বয়সী নারীরা ছুটছেন কসমেটিকসের দোকানগুলোতে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জামা ও জুতার সাথে ম্যাচিং করে লিপস্টিক, নেইলপলিস আর মেকাপের অন্যান্য অনুষঙ্গ কিনতে নারীদের প্রসাধনী দোকানে দেখা গেছে। নামিদামি মার্কেট, সুপারশপ থেকে শুরু করে ফুটপাতেও পসরা সাজিয়ে চলে প্রসাধনী বেচাকেনা।
এদিকে করোনার স্থবির সময়কে কাটিয়ে ভালো বিক্রি হওয়ায় খুশি বিক্রেতারা। তবে ঈদে সব ধরনের পণ্যেরই দাম বৃদ্ধির অভিযোগ ক্রেতাদের।
বিক্রেতারা জানান, সব ধরনের ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে পার্লার আইটেম থেকে শুরু করে রেখেছেন সব ধরনের মেকাপের আইটেম।
তবে ঈদকে কেন্দ্র বাজারে সয়লাব চকবাজারের নকল প্রসাধনী।
মন্তব্য করুন
নোংরা বরফের শরবতে প্রাণ জুড়াচ্ছেন ঢাকাবাসী! (ভিডিও)
তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশ। বাইরে বেরোলেই গলা শুকিয়ে হয়ে যাচ্ছে কাঠ। তৃষ্ণা মেটাতে মন চায় বরফ ঠান্ডা এক গ্লাস শরবত। কাঠফাটা গরমে ঠান্ডা বরফ দেওয়া এক গ্লাস শরবতে যেন প্রাণ জুড়িয়ে যায়। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহের এই সময়ে সড়কের পাশে, মোড়ে মোড়ে বসেছে শরবতের দোকান। বিক্রি হচ্ছে লেবু, বেলের শরবত ও আখের রস। এ ছাড়া পেঁপে, আনারস, মাল্টা, আঙুরসহ বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ফলের জুস। আর তৃপ্তির ঢেঁকুর তুললেও ঠান্ডার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে মাছ হিমায়িত করার বরফ।
তীব্র গরমে একটু স্বস্তির আশায় রাস্তার পাশের এসব শরবত বা জুসের দোকানে হরহামেশাই ভিড় করছেন পথচারীরা। ক্লান্তি দূর করতে শরবত, আখের রস বা জুসে তৃষ্ণা মেটানো এই বরফ কোথা থেকে আসছে তা জানেও না ভোক্তা।
জানা গেছে, ওয়াসার সাপ্লাইয়ের পানি দিয়ে, মাছসহ পচনশীল দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য তৈরি করা হয় এ বরফ। বরফ মিশ্রিত এসব পানিও গরমে দেহের ক্ষতি করে, তার ওপরে দূষিত পানির ফলে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে নানা রোগ।
মাছ বাজারের পানি আর ছাগলের মল-মূত্রে একাকার নোংরা পরিবেশে রাখা বরফ কিনে তা দিয়ে আখের রস করছিলেন ফার্মগেট এলাকার এক বিক্রেতা, আরটিভির ক্যামেরা দেখেই পালানোর চেষ্টা করেন তিনি।
একজন অ্যালোভেরার শরবত বিক্রেতা বলেন, স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকায় সবসময় বরফ ব্যবহার করি না। তবে গরমে তৃষ্ণা মেটাতে বরফের চাহিদা থাকায় ব্যবহার করছেন তিনিও।
শরবত পান করা ক্রেতারা বলেছেন, গরমে হাতের নাগালে শরবত পেয়ে আমরা কিনে খাই। কিন্তু এসব বরফ কোথা থেকে আসে তা জানি না।
নগরবাসী বলছেন, দূষিত পানির এই বরফ মিশিয়ে নানা ধরনের পানীয় বিক্রি করা হচ্ছে। এজন্য সরকারের তদারকির অভাবকেই দায়ী করছেন তারা।
মাছ কেটে জীবন চলে তাদের
পায়ে বটি রেখে কাঠের ওপর সারাক্ষণ মাছ কাটেন। এই মাছ কাটতেই দিন শুরু হয়, মাছ কাটতে কাটতেই দিন কাটে। অন্যের মাছ কাটা পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছেন এই শ্রমজীবীরা। যদিও এ পেশায় আসার পেছনে রয়েছে নানা ঘটনা।
মাছের আকার ভেদে কেজিপ্রতি মাছ কাটতে তারা নেন ২০ থেকে ৩০ টাকা। এতে দিনে আয় হয় ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। এই টাকা থেকে বসার জায়গা, ময়লা ফেলা ও ছাই কিনতে দৈনিক খরচ হয় ৯০ টাকারও বেশি। পরিবারের উপার্জনক্ষম যখন নারী তখন এই সামান্য আয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয় তাদের। যদিও সপ্তাহের বন্ধের দিনগুলোতে বাজারে ক্রেতা বেশি থাকায় কিছুটা বাড়তি আয় হয়। তাই সপ্তাহের বন্ধের দিনের আশায় থাকেন তারা। তাই ঠান্ডা-জ্বরে অসুস্থ হলেও কাজে আসেন এই মাছ কাটিয়ারা।
কর্মব্যস্ত এই শহরে বিত্তবান ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মধ্যে বাজার থেকে কাটানোর প্রবণতা বাড়ছে। গৃহস্থালির কাজে সময় বাঁচাতে মাছ কাটার জটিলতা এড়িয়ে যান তারা। এমনিতে সারাদিন নানা কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। বাসায় কাজের লোকের সমস্যা রয়েছে। মেয়েরা রান্নাবান্না আর ঘরের জরুরি কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তাই সময় বাঁচাতে, বাজার থেকে মাছ কিনে পরিষ্কার করে নিয়ে যায় তারা। এতে করে বাড়তি কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না।
তাই এই মাছ কাটিয়াদের চাহিদা বাড়ছে। সময় বাঁচাতে ২০ থেকে ৩০ টাকা দিয়ে বাজার থেকে ছোট ও বড় মাছ কাটিয়ে নেন চাকরিজীবী ও মেসে থাকা লোকজন।
এ পেশায় যেমন হতদরিদ্র নারীদের অর্থনৈতিক ভাবে করছে স্বাবলম্বী তেমনি ব্যস্ত নগরীর মানুষের গৃহস্থালির কাজকেও সহায়তা করছে। তবে সিটি কর্পোরেশনের এই খোলা স্থানে মাছ কাটায় নানা সমস্যায় পড়তে হয় তাদের।
১৩৫ বছর বয়সে হাঁটছেন কারও সাহায্য ছাড়াই, লাগছে না চশমা
একাই অজু করে আদায় করেন তাহাজ্জুদ নামাজ। শরীরের চামড়ায় পড়ে গেছে ভাঁজ, বয়সের ভারে অনেকটাই গেছেন কুজিয়ে। ১৩৫ বছর পার করেও হাঁটছেন নিজ পায়ে। চলাফেরায় লাগছে না চশমা। বছর কয়েক আগেও স্মৃতি ও শ্রবণ শক্তি দুটোই ছিল প্রখর। দেশের সবচেয়ে বয়স্ক নারীদের একজন টাঙ্গাইলের তাম্বিয়াতুন নেছা।
৩১ বছর আগেই হারিয়েছেন স্বামী রিয়াজ উদ্দিন আহমেদকে। তাম্বিয়াতুন নেছার স্বামীও বেঁচে ছিলেন ১১০ বছর। বিয়ের ১০ বছর পর জন্ম নেয় প্রথম সন্তান লাইলী বেগম। সেই সন্তানের বয়সও প্রায় একশ ছুঁই ছুঁই। চার ছেলে দুই মেয়ে, তারাও সবাই প্রায় সত্তর থেকে আশির ঊর্ধে। এখন ৬৯ জন সদস্যের পরিবার তাম্বিয়াতুন নেছার।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দিঘলকান্দি ইউনিয়নের শেখশিমুল গ্রামের বাসিন্দা তাম্বিয়াতুন নেছা ৭ সন্তানের জননী। তিনি এখনও একাই অজু করেন। রোজাসহ নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি আদায় করেন গভীর রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ। চশমা ছাড়াই প্রতিনিয়ত করতে পারেন কোরআন তেলাওয়াত।
পাঁচ প্রজন্ম দেখে যাচ্ছেন প্রবীণ এ নারী। বয়স জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী ১১৯ বছর হলেও তা মানতে নারাজ পরিবারের সদস্যরা। তাদের দাবি ভোটার তথ্য সংগ্রহকারী অনুমান করেই তার জন্ম সাল ১৯০৫ দিয়েছিলেন। এখন তার বয়স ১৩৫।
পরিবারের সবাই মিলে সেবা যত্ন করেন তার। উৎসাহ দিয়ে বড় ছেলের ঘরের নাতিকে বানিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান। তাম্বিয়াতুন নেছাকে ঘিরে খুশিতে আত্মহারা সবাই। সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনায় সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। তাম্বিয়া খাতুনের ভালোবাসার কথা জানালেন এলাকাবাসীও।
এদিকে ঘাটাইলের ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মটু তার দাদির উৎসাহে ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ার কথা জানিয়ে সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। দেশের সবচেয়ে বেশি বয়স্ক নারীর খেতাব পাবেন তাম্বিয়াতুননেছা। এমন প্রত্যাশা পরিবারের।
যে রেস্টুরেন্টে দুপুর হলেই নামে বৃষ্টি, তীব্র গরমে মেলে স্বস্তি
তীব্র গরমে যেখানে হাঁসফাঁস অবস্থা, সেখানে মাগুরা এই হোটেলে নামীদামি রেস্টুরেন্টের মতো নেই না কোনো কুলিং ব্যবস্থা। তাই তীব্র দাবদাহের মধ্যেও ভোক্তাদের একটু স্বস্তি দিতে এই অভিনব পদ্ধতি বেছে নিয়েছেন রবিউল ইসলাম।
মাগুরা শহরের ইসলামপুর পাড়ায় অবস্থিত ভূমি রেজিস্ট্রি অফিসের পিছনে এই হোটেলটিতে দুপুর হলেই দোকানে নামে বৃষ্টি। টিনের চালে টুপটাপ বৃষ্টির শব্দে ভেতরে খাবার খাচ্ছেন ভোজনরসিকরা।
বাইরে যেখানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি থাকে সেখানে কুলিং সিস্টেমের কারণে রবিউলের হোটেলের ভেতরের তাপমাত্র থাকে ২৭ থেকে ২৮ ডিগ্রি। কৃত্রিম বৃষ্টির মাধ্যমে টিনের চালকে ঠান্ডা রাখার ব্যবস্থা করেছেন তিনি।
দীর্ঘ ৫৭ বছর ধরেই এই খাবার হোটেল ব্যবসায় যুক্ত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রবিউল। তার হোটেলে এমনিতেই কাস্টমার বেশি হয়। কারণ, তার হোটেলে খাসি, মুরগি, মাছ, সবজি সবই পাওয়া যায়। বিশেষ করে রেজিস্ট্রি অফিসের পেছনে হওয়ায় সপ্তাহের অফিস ডেতে বেশি সমাগম হয়।
এ বিষয়ে রবিউল ইসলাম বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকে আমরা এই হোটেল ব্যবসায় জড়িত। আমার দুই চোখ নষ্ট হয়েছে অনেক বছর আগে। তাই লেখাপড়া বেশিদূর করতে পারিনি। মানুষের ভালোবাসা ও দোয়ায় ব্যবসায় ভালোই চলছিল। সম্প্রতি লক্ষ্য করলাম গরমের কারণে আমার হোটেলে মানুষ আসতে চাইতো না। টিনের চালার হোটেল। তাই গরম বেশি। সে কারণে কাস্টমারের সংখ্যা অনেক কম ছিল। এ সময় রুমের তাপ কমানোর বুদ্ধি বের করি। মূলত ইন্টারনেট থেকে দেখে আমি আমার ঘরের চালার ওপর ওয়াটার কুলিং সিস্টেম লাগাই। এটা করতে খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা।
এই কৃত্রিম বৃষ্টিতে ভ্যাপসা গরমের পরিবর্তে রুমের তাপমাআত্রা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকছে। এমন অভিনব ব্যবস্থা দেখে খাবার খেতে অনেকেই আসছেন এই হোটেলটিতে। ভোক্তাদের সেবা দিতে পেরে খুশি রবিউল।
এক বাড়ি দুই দেশে (ভিডিও)
ধরুন আপনি ড্রয়িং রুমে বসে টিভি দেখছেন। হঠাৎ জানতে পারলেন আপনি যে চেয়ারে বসে আছেন সেটির অবস্থান এক দেশে আর টেলিভিশন সেটের অবস্থান আরেক দেশে। শুনতে কী অদ্ভুত না? যেখানে বাড়ি একটাই, অথচ রান্নাঘর এক দেশে আর শোয়ার ঘর পড়েছে অন্যদেশে।
শুনতে অদ্ভুত লাগলেও বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডসের সীমান্ত শহর বার্লের অনেকগুলো বাড়ির চিত্র এমনই। এ বার্লে শহরে ৭ হাজারেরও অধিক মানুষের বাস। এখানে অনেক কিছুই দুটো করে, যেমন পুলিশ স্টেশন, গীর্জা, ডাকঘর কিংবা টাউনহল সবই দুটো করে।
বেলজিয়ামে আছে নেদারল্যান্ডসের ২২টি অংশ। কিন্তু এমনটা হলো কীভাবে?
জানা গেছে, ১১৯৮ সালে দুইজন রাজপরিবারের সদস্য কিছু জমি ভাগাভাগি করতে গিয়ে এমন জটিল অবস্থা তৈরি করেন। তবে এই শহরে ঢুকে যে কেউ চোখ খোলা রাখলে বুঝতে পারবেন তিনি কোথায় আছেন, বেলজিয়াম নাকি নেদারল্যান্ডস। কারণ, বর্ডার এলাকার রাস্তায় কিছু পেরেক আর ফুটপাতে বসানো আছে ক্রস। যাকে বলে বার্লে শহরের ট্রেডমার্ক।
লাল ইটের ঘর, বড় খাদ্যের গুদাম আর পরিপাটি রাস্তা প্রথম দেখায় বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডসের অন্য কোনো শহর থেকে বার্লেকে আলাদা মনে হবে না। তবে এই শহরের ঘরবাড়ি, রেস্তোরাঁ, জাদুঘর এমনকি গ্যালারির মাঝখানেও আছে দুই দেশকে বিভক্তকারী সীমানারেখা।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, অবস্থান করা বাসিন্দারা কোন দেশের নাগরিকত্ব বহন করে? উত্তরটাও খুবই দারুণ, সাধারণত বাড়ির মূল দরজা যে দেশে পড়ে সে দেশেই বাড়ির হোল্ডিং রেজিস্ট্রেশন করা হয়।
জানা যায়, ১৯৯৫ সালে একদিন হঠাৎ করেই ডাচ কর্মকর্তারা এক বেলজিয়াম নারীর বাড়ির দরজায় কড়া নাড়েন। ৬৮ বছর বয়সী ওই নারী বেলজিয়ামের নাগরিক হিসেবেই এই শহরে বসবাস করছিলেন।
তারা বললেন, আপনার বাড়ির সদর দরজা নেদারল্যান্ডসে, তাই এখন থেকে আপনি ডাচ নাগরিক। নতুন পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট সংগ্রহ করে নিন। তখন বুদ্ধি খাটিয়ে এই সমস্যার সমাধান করেন ওই নারী। বাড়ির নকশা পরিবর্তন করে একটি জানালাকে দরজা বানিয়ে ফেলেন। এতেই সমস্যার সমাধান হয়ে গেলো। এতে করে দরজা বেলজিয়াম সীমান্তের মধ্যেই থাকলো, তাকেও আর ইচ্ছার বিরুদ্ধে নেদারল্যান্ডসের নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে হলো না।
একই বিছানায় শুয়ে আছেন, যেখান ডান পাশে ফিরলে বেলজিয়াম, বাম পাশে ফিরলে নেদারল্যান্ডস। কিংবা বাড়ি থেকে বের না হয়েও এক দেশে রান্না করে অন্য দেশে খেতে পারা, শুধু এই শহরেই সম্ভব।
এসি হেলমেট! তীব্র গরমেও রাস্তায় থাকবে মাথা ঠান্ডা (ভিডিও)
তীব্র গরম যে শুধু বাংলাদেশে অনুভূত হচ্ছে তা নয়, বেশ কয়েক দিন ধরে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের কয়েকটি শহরে রোদের খরতাপে পুড়ছে। এসব শহরে জনজীবনে হাসফাস অবস্থা। যেখানে অফিস ও বাসাবাড়িতে সার্বক্ষণিক এসিতেও টিকে থাকা মুশকিল। সেখানে এই তাপদাহে রাস্তায় সেবা দিতে সর্বদা প্রস্তুত থাকে ট্রাফিক পুলিশ। প্রচণ্ড গরমে লড়াই করার জন্য এক অনন্য পদক্ষেপ নিয়েছেন ভারতের উত্তর প্রদেশ লখনৌ ট্রাফিক পুলিশ বিভাগ।
গরমে মাথা ঠান্ডা রাখতে কর্মীদের মাথায় দেওয়া হয়েছে এসি হেলমেট। ট্রাফিক পুলিশ যাতে তীব্র গরমেও প্রফুল্লের সঙ্গে কাজ সম্পন্ন করতে পারে তাই এমন উদ্যোগ।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে এই ডিভাইস। এর ভিত্তিতে কানপুর ট্র্যাফিক পুলিশকে দেওয়া হচ্ছে হেলমেটগুলো।
ট্রাফিক পুলিশদের কষ্টের কথা চিন্তা করে আইআইএম ভাদোদরার এক ছাত্র এই অভিনব আবিষ্কার করেছেন। এটি ব্যাটারি দ্বারা চালিত। একবার চার্জ দিলে চলবে প্রায় আট ঘণ্টা। হেলমেটে এসি ভেন্ট রয়েছে যাতে মাথায় ঠান্ডা বাতাস আসে। এতে স্বস্তিতে কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশরা।
অভিশপ্ত দ্বীপ, যেখানে মুসলিমদের জীবন্ত কবর দেওয়া হতো
ইসলামের শুরু থেকেই মুসলিমদের ওপরে চলত নানা পর্যায়ের নির্মমতা। মক্কায় মুশরিকরা আর মদিনায় ইহুদিরা মুসলিমদের নির্যাতন করত। মুসলিমদের রক্তে শীতল হয়েছিল তপ্ত মরুভূমি। এমনকি সদ্য জন্ম নেওয়া কন্যা শিশুদের জীবন্ত কবর দেওয়া হতো। এমনই কিছু নির্মমতার সাক্ষী পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাসাগর আটলান্টিকের অন্তর্ভুক্ত দ্বীপ গোরি।
মুসলমানদের ওপর নির্দয় বর্বরতার সাক্ষী এ দ্বীপ ঠিক আটলান্টিক মহাসাগরের মাঝখানে অবস্থিত। ৯০০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৩৫০ মিটার প্রস্থের ছোট এই দ্বীপ নানা ইতিহাস আর রহস্যে ঘেরা। সে ইতিহাস আনন্দ কিংবা উজ্জ্বলতার নয়, সে কাহিনি শুধুই অত্যাচার আর কান্নার।
এই ছোট দ্বীপেই মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের দ্বীপ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। যেখানে অন্তত ৩০০ বছর ধরে মুসলিমদের ধরে এনে অমানবিক নির্যাতন করে মেরে পুতে রাখা হতো। মুসলিম দাস-দাসিদের ওপর নির্বিচারে গুলি করার জন্য ব্যবহার করা হতো ৬ হাজার ৬৪৬ টনের কামান।
ইতিহাসবিদ আনা লুসিয়া আরাউজোর আলোচনা অনুসারে ফ্রান্স যখন সেনেগাল শাসন করত তখন সেনেগালের দাস-দাসিদেরকে জোর করে জাহাজের শিকলের সঙ্গে বেঁধে এই দ্বীপে রেখে আসতো। যারা জাহাজ থেকে নামতে না চাইত, তাদের জাহাজ থেকে এই মহাসাগরে ফেলে দেওয়া হতো এবং এ মানুষগুলো হাঙর মাছের আহার হয়ে যেতো।
আফ্রিকা থেকে লাখ লাখ কৃষ্ণবর্ণের মানুষদের জোর করে বন্দি করে ইউরোপ ও আমেরিকায় নিয়ে গিয়ে ক্রীতদাস হিসেবে কাজ করানো হতো। মানবিকতার জন্য চরম লজ্জাজনক সেই প্রথা বাস্তবায়নে গোরি আইল্যান্ডকে ব্যবহার করা হতো।
মাত্র ৮ বর্গফুটের একটা ছোট ঘরে একটি মাত্র জানালা। সেখানেই গাদাগাদি করে রাখা হত ৩০ জন দাসকে। এই ছোট ঝুপড়ি ঘরগুলো ছিল অসুখ-বিসুখের কারখানা। মোটা শেকল দিয়ে বেঁধে বসিয়ে রাখা হতো দাসদের। খাবার জুটত দিনে মাত্র একবার। তাদের পরনে থাকতো একটুকরো কাপড়, শরীরের অধিকাংশ অংশই থাকতো নগ্ন। একটা সরু ঘরে তাদের ঘুমাতে দেওয়া হতো। সেখানেই মেঝের ওপর শুয়ে থাকত তারা।
সবচেয়ে দুর্বিষহ ছিল মায়ের থেকে শিশুদের আলাদা করে এতটাই দূরে রাখা হত যে, শিশুদের কান্না মায়েদের কান পর্যন্ত পৌঁছনোর আগেই হাওয়ায় মিলিয়ে যেত। আরেকটি হৃদয়বিদারক দৃশ্য ছিল ‘ডোর অব নো রিটার্ন’ নামের একটি দরজা। সেই দরজা পেরিয়ে একবার যে ওপারে গেছে, আর কখনও ফেরেনি।
এই চরম নির্যাতন মেনে নিতে না পেরে প্রতিবাদ করতো কিছু দাস। প্রতিবাদের শাস্তি হিসেবে তাদেরকে রাখা হতো ছোট অন্ধকার ঘরে। ওই ঘরে সমুদ্রের জল ঢুকতো আর একসময় বন্দিরা মারা যেতো।
৩০০ বছরেরও বেশি দুঃসহ নির্যাতনের অবসান ঘটে ১৮৪৮ সালে। তখনও সেখানে ৫ হাজার বন্দিসহ মোট ৬ হাজার মানুষের বসবাস ছিল। যদিও পরে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তকমা দেয় এই গোরি আইল্যান্ডকে। আর মুসলিম দাসদের বন্দিশালা হিসেবে ‘স্লেভ হাউস’কে করা হয় জাদুঘর। এ ভাবেই নির্যাতনের নিষ্ঠুরতম ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে গোরি আইল্যান্ড।